মোঃ জহিরুল হক বাবু।।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কুমিল্লা -৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নব-নির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন বলে জানিয়েছেন তার একান্ত সচিব মাহবুব হোসেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
আবদুল মতিন খসরু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি একাধারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নব-নির্বাচিত সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন।
গত ১৫ মার্চ করোনা টেস্টের পরদিন (১৬ মার্চ) সকালে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু ১৯৫০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে পাঁচবার আওয়ামীলীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। শিক্ষাজীবনে তিনি এলএলবি এবং বি.কম পাস করে আইন পেশায় নিয়োজিত হন।
তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে (কমান্ডার হিসেবে) সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯৬-২০০১ সালে আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ১৯৯৬ সালে সংবিধান ও মানবতাবিরোধী কালো আইন ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিলের পক্ষে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
যার ফলশ্রুতিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকা-ের বিচারের পথ উন্মোচিত হয় এবং পরবর্তীকালে সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারবর্গের আত্মস্বীকৃত খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।
বাংলাদেশের বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থাকে আমূল সংস্কার ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে আবদুল মতিন খসরু আইনমন্ত্রী থাকাকালীন বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যান্ড জুডিশিয়ারি ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রজেক্ট নামে ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। আইনজীবীদের কল্যাণে সর্বোত্তম সহায়তা প্রদান এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অ্যানেক্স ভবন ও অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ভবন নির্মাণের সমুদয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন, যা পরবর্তীতে বাস্তবায়িত হয়। হাইকোর্টের মূল ভবন ও পুরনো ভবনের মধ্যে যাতায়াত সুবিধার জন্য একটি গ্যাংওয়ে নির্মাণ এবং সুপ্রিম কোর্ট অ্যানেক্স ভবনসহ সারা বাংলাদেশের বিচারালয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেন।
১০ম ও ১১তম জাতীয় সংসদে (২০১৭ সাল থেকে অদ্যাবধি) তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে আইনজীবীদের কল্যাণে নিরলস কাজ করেন। ২০১২ সালের ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে তিনি সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন এবং ২০১৫ সালে পুনরায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page